ছাঁদ বাগানে ড্রাগন ফল চাষ (Dragon Fruit Cultivation on Rooftop) একটি লাভজনক ও চিত্তাকর্ষক উদ্যোগ হতে পারে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে যারা সবুজ পরিবেশ তৈরি ও স্বাস্থ্যকর ফল উৎপাদনে আগ্রহী তাদের জন্য। নিচে ধাপে ধাপে ড্রাগন ফল চাষের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:
১. পরিবেশ ও স্থান নির্বাচনঃআবহাওয়া: ড্রাগন ফল গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ভালো হয়। ২৫–৩৫°C তাপমাত্রা উপযোগী।ছাঁদ: ছাঁদে পর্যাপ্ত সূর্যালোক থাকা উচিত (প্রতিদিন অন্তত ৬–৮ ঘণ্টা)।
পানি নিষ্কাশন: ছাঁদে ভালো পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন যাতে পানি জমে না থাকে।
২. পাত্র নির্বাচন ও প্রস্তুতিঃপাত্রের ধরন: বড় টব বা ড্রাম (৫০–৬০ লিটার) ব্যবহার করা যায়।ড্রেনেজ: টবের নিচে ড্রেনেজ হোল থাকতে হবে।মাটি প্রস্তুতি:
পচানো গোবর সার/কম্পোস্ট: ৩০%
সামান্য চুন (pH নিয়ন্ত্রণে)
৩. চারা রোপণঃ চারা সংগ্রহ: স্বাস্থ্যবান ও রোগমুক্ত ড্রাগন ফলের কাটিং বা চারা বেছে নিন।রোপণ সময়: গ্রীষ্মকাল উপযুক্ত, তবে বারোমাসই চাষ করা যায়।
রোপণ পদ্ধতি:টবের মাঝে একটি খুঁটি (৫–৬ ফুট) দিন যাতে গাছটি উঠতে পারে।কাটিং ৪–৬ ইঞ্চি মাটিতে পুঁতে দিন।
পানির ব্যবস্থা রাখুন, তবে অতিরিক্ত পানি দেবেন না।
৪. পরিচর্যাসেচ: সপ্তাহে ২–৩ বার সেচ দিন, গরমকালে বেশি হতে পারে।
সার প্রয়োগ: প্রতি ১৫–২০ দিনে জৈব সার (কম্পোস্ট/গোবর) দিন। মাঝে মাঝে হাড়ের গুঁড়ো বা ফসফেট সার দিতে পারেন। ছাঁটাই: বাড়তি ডালপালা কেটে দিন, যাতে গাছ মূল খুঁটির দিকে বাড়ে। পোকা-মাকড় দমন: জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।
৫. ফল আসা ও সংগ্রহঃফুল ফোটে: সাধারণত ৬–৮ মাস পর ফুল ফোটে। রাতে ফোটে, সকালে ঝরে যায়।ফল ধরা: ফুলের ৩০–৪০ দিন পর ফল সংগ্রহ উপযোগী হয়।
ফলের রঙ: ফল গাঢ় গোলাপি বা লালচে হলে বুঝবেন পাকেছে।
৬. উৎপাদন ও লাভএকটি গাছ থেকে বছরে ১০–১৫টি ফল পাওয়া যায়।
ফলের গড় ওজন ৩০০–৬০০ গ্রাম।
বাজারে প্রতি কেজির দাম ২০০–৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
টিপসঃগাছের পাশে কৃত্রিম পরাগায়ন করলে ফলন বাড়ে।রাতের বেলা ফুল ফুটে বলে, পরাগায়নের জন্য সন্ধ্যায় তুলা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।