নীম খৈল (Neem Khail বা Neem Cake) হলো নিম বীজ থেকে তেল বের করার পর বাকি যে খৈলটা থাকে, সেটাকে শুকিয়ে গুঁড়া করে তৈরি করা হয়। এটি একটি অসাধারণ জৈব কীটনাশক ও সার—যা গাছকে পুষ্টিও দেয়, আবার মাটিকে রোগমুক্ত রাখতেও সাহায্য করে।
নীম খৈলের উপকারিতা:
পোকামাকড় ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর (নেমাটোড, পিঁপড়া, গাছের গোড়ার পচা প্রতিরোধ করে)
মাটির গঠন উন্নত করে — জৈব পদার্থ বাড়ায়
নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশ সরবরাহ করে
সার হিসেবে কাজ করে এবং সার শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়
টবের গাছে ব্যবহারের নিয়ম:
প্রয়োগের পরিমাণ:ছোট টবের জন্য – ১-২ চা চামচ
মাঝারি টবের জন্য – ১-২ টেবিল চামচ
বড় টব/ড্রাম – ৩-৪ টেবিল চামচ
ব্যবহার পদ্ধতি:গাছের চারপাশে ছিটিয়ে দিন বা হালকা মাটি খুঁড়ে মিশিয়ে দিন।
প্রয়োগের পর পানি দিয়ে দিন।
চাইলে কম্পোস্ট বা গোবর সারের সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন।
প্রয়োগের সময় ও ফ্রিকোয়েন্সি:প্রতি ৩০-৪৫ দিন পর ব্যবহার করুন।
বর্ষার আগে বা বসন্তের শুরুতে দিলে গাছকে পোকা ও ছত্রাক থেকে রক্ষা করে।
নীম খৈল কিভাবে গাছকে রক্ষা করে?এতে রয়েছে Azadirachtin, যা এক প্রাকৃতিক কীটনাশক – গাছের শেকড়ে থাকা পোকা ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
হাড়গুঁড়া + শিং কুচি + নীম খৈল = অল ইন ওয়ান জৈব সার।হাড়গুঁড়া + শিং কুচি + নিম খৈল দিয়ে তৈরি একদম কার্যকরী ও ভারসাম্যপূর্ণ একটি ঘরোয়া জৈব সার মিশ্রণ — যা টবের গাছ, ফুলগাছ, ফলগাছ, এমনকি সবজি গাছের জন্যও উপযুক্ত।
"ত্রিমাত্রিক জৈব সার" মিশ্রণ রেসিপি
উপকরণ (পরিমাণ সামঞ্জস্য করতে পারেন):উপাদান পরিমাণ ভূমিকা
হাড়গুঁড়া ১ কাপ মূল ও ফুল/ফল বৃদ্ধিতে ফসফরাস
শিং কুচি ১ কাপ পাতা ও সবুজ ডালপালায় নাইট্রোজেন
নিম খৈল ১ কাপ পোকামাকড় দূর ও সার শোষণে সহায়ক
ভার্মি কম্পোস্ট / গোবর সার ২ কাপ জৈব পদার্থ যোগায়, মাটি সমৃদ্ধ করে
চাইলে কাঠের ছাই (১/২ কাপ) ও নারিকেল ছোবড়া পাউডার (১/২ কাপ) মেশাতে পারেন।
তৈরির ধাপ:একটি শুকনা বড় পাত্রে সব উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
চাহিদামতো ভাগ করে বায়ুরোধী কন্টেইনারে সংরক্ষণ করুন।
প্রয়োগের সময় গন্ধ এড়াতে ছায়ায় ১ দিন শুকিয়ে নিতে পারেন।
ব্যবহার পদ্ধতি (টবের গাছে):টবের আকার প্রয়োগ পরিমাণ
ছোট টব ১-২ চা চামচ
মাঝারি টব ১-২ টেবিল চামচ
বড় টব বা ড্রাম ৩-৪ টেবিল চামচ
গাছের গোড়ার ২-৩ ইঞ্চি দূরে সারটি ছিটিয়ে দিন।
হালকা মাটি খুঁড়ে মিশিয়ে দিন।
প্রয়োগের সময় ও ফ্রিকোয়েন্সি:প্রতি ৪৫ দিন পর প্রয়োগ করুন।
নতুন চারা রোপণের সময় মাটিতে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
সতর্কতা:অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না — বেশি সার দিলে গাছের ক্ষতি হতে পারে।
ভালোভাবে শুকানো উপকরণ ব্যবহার করুন — যেন ছত্রাক না লাগে।
প্রয়োগের পর পশুপাখি যেন টব না খোঁড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন