হাড়গুঁড়া ব্যবহারের উপকারিতা:
হাড়গুঁড়া (Bone Meal) টবের গাছে ব্যবহার একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক সার হিসাবে পরিচিত। এতে মূলত ফসফরাস ও কিছুটা নাইট্রোজেন থাকে, যা গাছের মূল বৃদ্ধিতে এবং ফুল ও ফল ধরাতে সহায়তা করে। নিচে হাড়গুঁড়া ব্যবহারের উপায় ও সতর্কতা দেওয়া হলো:
হাড়গুঁড়া ব্যবহারের উপকারিতা:মূল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে — গাছের শিকড় ভালোভাবে গজাতে সাহায্য করে।
ফুল ও ফলের উৎপাদন বাড়ায় — বিশেষ করে ফুলগাছ ও ফলের গাছে ভালো ফলন দেয়।
মাটির গঠন উন্নত করে — মাটিকে ঝুরঝুরে করে তোলে।
ধীরে ধীরে কাজ করে — দীর্ঘ সময় ধরে পুষ্টি সরবরাহ করে।
ব্যবহারের নিয়ম (টবের গাছের জন্য):মাত্রা:
ছোট টবের গাছের জন্য প্রতি টবে প্রায় ১-২ চা চামচ হাড়গুঁড়া ব্যবহার করুন।
বড় টবের জন্য ১-২ টেবিল চামচ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
গাছ লাগানোর সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিন।
আগে থেকে লাগানো গাছে প্রয়োগ করতে চাইলে, গাছের চারপাশে সামান্য গর্ত করে হাড়গুঁড়া দিন এবং পরে মাটি দিয়ে ঢেকে দিন।
জলসেচ:
সার দেয়ার পরে ভালোভাবে পানি দিন যেন গুঁড়াটা মাটির সাথে মিশে যায়।
সতর্কতা:অতিরিক্ত ব্যবহার করলে মাটির pH পরিবর্তন হতে পারে ও গাছের ক্ষতি হতে পারে।
পশুপাখি যেন টবে না খুঁড়তে পারে সেজন্য প্রয়োগের পর মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা জরুরি।
ভালো মানের, পচানো হাড়গুঁড়া ব্যবহার করুন যাতে দুর্গন্ধ না থাকে।
কোন গাছে ভালো ফল দেয়:টমেটো, বেগুন, মরিচ (সবজি গাছ)
ফলজ গাছ (যেমন লেবু, স্ট্রবেরি)
অর্কিড ও অন্যান্য ফুলগাছ
হাড়গুঁড়া দিয়ে ঘরোয়া জৈব সার তৈরির রেসিপি
প্রয়োজনীয় উপকরণ:হাড়গুঁড়া – ১ কাপ (ফার্মেসি/নার্সারি বা বাসায় শুকিয়ে গুঁড়া করে)
গোবর সার/ভার্মি কম্পোস্ট – ২ কাপ
আস্ত ছাই (ঝরা কাঠের) – ১ কাপ (ঐচ্ছিক, পটাশ যোগ করতে চাইলে)
চাকচিক্য বাড়াতে: নিম খল (নিম বীজের গুঁড়া) – ১/২ কাপ (পোকা দূর রাখতে সহায়ক)
তৈরি ও ব্যবহারের নিয়ম:সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
প্রতিটি টবের গাছে ২-৩ চা চামচ (বড় টবে ১-২ টেবিল চামচ) প্রয়োগ করুন।
প্রয়োগের পর গাছের চারপাশে হালকা খুঁড়ে দিন ও ভালোভাবে মাটি দিয়ে ঢেকে দিন।
প্রয়োগের সময়:প্রতি ৩০-৪৫ দিন পর পুনরায় ব্যবহার করা যায়।
গাছে ফুল/ফল আসার মৌসুমে সবচেয়ে উপকারী।
কিছু বাড়তি টিপস:হাড় নিজে গুঁড়া করতে চাইলে, ভালোভাবে ফুটিয়ে শুকিয়ে তারপর ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে নিন।
বাসায় তৈরি হাড়গুঁড়া দুর্গন্ধযুক্ত হলে, রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন অথবা কাঠের ছাই মিশিয়ে গন্ধ কমান।